Athari (Bengali)
1.97K subscribers
215 photos
34 videos
240 files
71 links
____________________
Download Telegram
মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের উপর বিমান দুঘর্টনায় গোটা দেশজাতি শোকে মুহ্যমান। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মৃতদেরকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করুন। আহতদেরকে সুস্থ করে দিন। মৃত ও আহতদের পরিবারবর্গকে উত্তম ধৈর্য ধারণ করার তাওফিক দান করুন।

সম্মানিত জুমার খতীবগণ!
আগামী জুমার খোতবাতে আপনারা এমন শোকময় পরিস্থিতি একজন মুমিন কিভাবে কাটিয়ে উঠবেন সে বিষয়ে দিক-নির্দেশনামূলক খোতবা দিতে পারেন। শোকাহত ব্যক্তি ও পরিবারকে সান্ত্বনামূলক কুরআন-হাদিস শুনাতে পারেন। এই পয়েন্টগুলোর আলোকে আলোচনা করতে পারেন।

১। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (নিশ্চয় আমরা আল্লাহর মালিকানাধীন এবং নিশ্চয় আমরা আল্লাহর কাছে ফিরে যাব)- সূরা বাক্বারার এই ১৫৬ নং আয়াতটি ব্যাখ্যা করা। জীবন-মৃত্যুর মালিক আল্লাহ। আমার মালিক, আমার সন্তান-সন্ততি, পিতামাতা, স্বামী-স্ত্রী সবার মালিক আল্লাহ। তাঁর সিদ্ধান্ত অলঙ্ঘনীয়।

২। আগুনে পুড়ে নিহত হওয়া ভালো মৃত্যুর আলামত। যেহেতু তারা শহীদ। সহিহ তারগীব ও তারহীব, হাদিস নং: ১৩৯৬।

৩। যাদের একাধিক অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তান মারা গিয়েছেন তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতের সুসংবাদ যদি তারা ধৈর্য ধারণ করেন।

৪। প্রিয় সন্তানকে হারিয়ে আল্লাহর সিদ্ধান্তের প্রতি সন্তুষ্ট থেকে আল্লাহর প্রশংসা কারী ও ধৈর্যধারণকারী মুসলিমের জন্য জান্নাতে "প্রশংসা বাড়ী"-র সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। সুনানে তিরমিযি হাদিস নং- ৯৪২।

৫। বিপদ-মুসিবতের প্রথম ধাক্বাতেই ধৈর্য ধারণ করতে হয় যেমনটি হাদিসে এসেছে। সহিহ বুখারী, হাদিস নং: ১৩১২।

৬। আল্লাহর তাকদীরের উপর ঈমানের উপর তাগিদ দেয়া। মৃত্যু নির্ধারিত ও মৃত্যুর সময় অলঙ্ঘনীয়। তাকদীরের প্রতি বিশ্বাস উপায়-উপকরণ গ্রহণে অবহেলার দিকে আহ্বান করে না বা কোন অপরাধীকে শাস্তি মুখোমুখি করা থেকে রেহাই দেয় না।

৭। আল্লাহ তার বান্দাকে তার পিতামাতা, আত্মীয়-স্বজন সবার চেয়ে বেশি ভালোবাসেন। তাই হতে পারে দুনিয়ার জীবনের চেয়ে আখিরাতের জীবন মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তির জন্য উত্তম।

৮। যিনি অন্যের জীবন রক্ষা করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন তিনি যেন কোন মানবজাতির জীবন রক্ষা করেছেন। সূরা মায়িদার আয়াত: ৩২।

৯। শোকাহত হয়ে কান্নাকাটি করা জায়েয। তবে, বিলাপ করা, চুল ছেড়া, জামাকাপড় ছেড়া, আল্লাহর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করা নাজায়েয। হাদিসে যেটাকে নিয়াহা বলা হয়েছে। দেখুন: সহিহ বুখারীর হাদিস নং: ১২৯৪।

১০। পুরুষ ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিনদিন শোক পালন করবেন। আর বিধবা নারীর ইদ্দত পালনের মেয়াদ চার মাস দশদিন। কেউ গর্ভবতী থাকলে সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত। সূরা বাক্বারার আয়াত: ২৩৪ এবং সূরা তাহরীমের আয়াত: ৪।
1
😢21
قولُ: "لا أدري" لا ينْقُص بِه قدْرُ الإنسان في العِلْم، بَلْ يزْدَادُ لأَنَّ النّاس إِذا رَأَوْا هَذا الرّجُلَ محتَرِزًا يقُولُ فِيما يعْلَمُ ويتَوقَّفُ عمَّا لا يَعْلَمُ وثِقُوا بِه، وعرَفُوا أنَّه لا يتكلَّمُ إلا بما عَلِم

কোনো বিষয়ে "আমি জানি না" বলাটা একজন ব্যক্তির জ্ঞানগত মর্যাদাকে কমিয়ে দেয় না। বরং তা মর্যাদাকে বাড়িয়ে দেয়। কেননা লোকেরা যখন দেখে- এই ব্যক্তি তো সে যা জানে তা বলার ব্যাপারে এবং সে যা জানে না সেই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে থেমে যাওয়ার ব্যাপারে খুবই সচেতন - তখন তারা উক্ত ব্যক্তির ব্যাপারে আশ্বস্ত থাকে এবং তারা চিনতে পারে যে- উক্ত ব্যক্তি অজানা বিষয়ে আগ বাড়িয়ে কথা বলেন না।

[শাইখ মুহাম্মদ বিন সালিহ আল উসাইমিন, সূরা রোম এর তাফসির, পৃষ্ঠা ১১-১২]

#Knowledge
13
উহুদ প্রান্তরের ঐতিহাসিক যুদ্ধ। যেখানে মক্কার মুশরিকরা দলবেধে প্রতিশোধ নিতে মদীনার পানে সফর করে মুসলিমদের ধরাশায়ী করার লক্ষ্যে। এই যুদ্ধে ছিলেন উম্মু ‘উমারাহ নুসাইবাহ বিনতু কা’ব (রা.) নামের এক বীরাঙ্গনা, যিনি অসীম বীরত্ব ও আত্মত্যাগের পরিচয় প্রদান করেন। তিনি ‘আয়িশাহ (রা।) ও অন্যান্য মুসলিম মহিলাদের সঙ্গে সেবিকারুপে যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত হয়ে আহত গাজীদের পানি সরবরাহ এবং অন্যান্য প্রকার সেবা-শুশ্রূষা প্রদান করছিলেন। চারিদিকে তলোয়ারে-তলোয়ারে সংঘর্ষ, আকাশে সাঁই করে বাতাস ভেদ করে এগিয়ে যাওয়া তীরের ঝাঁক। এমনি উত্তাল মূহুর্তে তিনি শুনতে পেলেন যে, মুসলিমরা পরাজিত হচ্ছে এবং কুরাইশরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে আক্রমণ করতে শুরু করেছে। এ সংবাদ শোনা মাত্রই উম্মু আম্মারাহ (রাঃ) কাঁধের মশক ও হাতের জলপাত্র ছুঁড়ে ফেলেন। ঐ সময় মুষ্টিমেয় ভক্ত প্রাণপণ করে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দেহ রক্ষা করছিলেন। উম্মু 'উমারাহ (রা.) সিংহীর ন্যায় তীব্র জোশ নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেন এবং বিশেষ ক্ষিপ্রতা ও নৈপুণ্য সহকারে তীর বর্ষণ করে কুরাইশদেরকে ধ্বংস করতে লাগলেন। এক সময় তিনি কুরাইশদের শক্তিশালী যোদ্ধা ইবনু ক্বামিয়ার সামনে পড়ে গেলেন। ইবনু ক্বামিয়ার তাঁর (উম্মু 'উমারাহ'র) কাঁধের উপর এত জোরে তরবারীর আঘাত করল যে,তার কাঁধ গভীরভাবে যখম হল। কিন্তু, তিনি এই যখম সত্ত্বেও ঘুরে দাঁড়ালেন এবং তাঁর তরবারী দ্বারা ইবনু ক্বামিয়াহকে কয়েকবার আঘাত করলেন। কিন্তু নরাধম দুটি লৌহবর্ম পরিহিত ছিল বলে বেঁচে গেল। শত্রুদের বর্শা ও তরবারীর আঘাতে তার সারা দেহ ক্ষতবিক্ষত ও জর্জরিত হয়ে পড়ল। কিন্তু এ বীরাঙ্গনা সে দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে নিজের কর্তব্য পালন করে যেতে লাগলেন। উহুদ যুদ্ধের বর্ণনা কালে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,

❝ ঐ বিপদের সময় আমি দক্ষিণে বামে যে দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করি, সে দিকেই দেখি যে, উম্মু আম্মারাহ (রাঃ) আমাকে রক্ষা করার জন্য যুদ্ধ করছে। ❞

আল্লাহ তা'আলা তাঁর উপর সন্তুষ্ট হোন, আমীন।

____
সূত্র: আর-রাহীক্ব আল-মাখতূম, শাইখুল হাদীছ আল্লামাহ সফিউর রহমান আল-মুবারাকপুরী (রহ.) ; তাওহীদ পাবলিকেশন্স, ৩য় সংস্করণের ২য় মুদ্রণ, ২০২০ ঈসায়ী। (ঈষৎ পরিমার্জিত)
7
👉 পাওনাদারের কথা বলার অধিকার রয়েছে।

জনৈক ব্যক্তি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে তার পাওনা আদায়ের কড়া তাগাদা দিল। সাহাবায়ে কিরাম তাকে শায়েস্তা করতে উদ্যত হলেন। তিনি বলেন, তাকে ছেড়ে দাও। কেননা, পাওনাদারের কথা বলার অধিকার রয়েছে। তার জন্য একটি উট কিনে আন এবং তাকে তা দিয়ে দাও। তাঁরা বললেন, তার উটের চেয়ে বেশী বয়সের উট ছাড়া আমরা পাচ্ছি না। তিনি বললেন, সেটিই কিনে তাকে দিয়ে দাও। কারণ, তোমাদের উত্তম লোক সেই, যে উত্তমরূপে ঋণ পরিশোধ করে। (সহিহ বুখারী; ২৩৯০)
4
7
ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন, গুনাহ বা পাপকাজ ত্যাগ করার উপকারিতা:

(১) সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।
(২) মানুষের অন্তরে মর্যাদা লাভ হয়।
(৩) পূর্বে লোকেরা ক্ষতি করে থাকলে লোকদের কাছ থেকে সাহায্য এবং নিরাপত্তা।
(৪) লোকেরা যদি গীবত করে থাকে, তাহলে তার সম্মান রক্ষা পায়।
(৫) আল্লাহ তার দুয়া কবুল করেন।
(৬) আল্লাহ তাআ’লার নৈকট্য।
(৭) ফেরেশতাদের নৈকট্য।
(৮) মানুষ ও জিনদের মধ্য থেকে যারা শয়তান তারা দূরে সরে যায়।
(৯) লোকেরা তাকে সাহায্য করার জন্য, তার চাহিদা পূরণ করার জন্যে এবং তার সাহচর্য ও ভালোবাসা পাওয়ার জন্য প্রতিযোগীতা করবে।
(১০) সে মৃত্যুকে ভয় করবেনা, বরং আল্লাহ তাআ’লার সাথে সাক্ষাত লাভের জন্য ও তাঁর কাছ থেকে পুরষ্কার পাওয়ার জন্যে আগ্রহী হবে।
(১১) এই দুনিয়া তার দৃষ্টিতে তুচ্ছ মনে হবে এবং পরকালকে অনেক মূল্যবান মনে করবে।
(১২) পরকালে অনেক বড় রাজত্ব ও মর্যাদা পাওয়ার জন্যে চেষ্টা করবে।
(১৩) আল্লাহর আনুগত্যের স্বাদ ফিরে পাবে।
(১৪) ঈমানের মিষ্টতা অনুভব করবে।
(১৫) আরশ বহনকারী ফেরেশতা ও আরশের চারপাশে আল্লাহর প্রশংসাকারী ফেরেশতাদের দুয়া লাভ করবে।
(১৬) কেরামান কাতেবীন দুইজন ফেরেশতা তার উপরে খুশি থাকবে এবং তারা তার জন্যে দুয়া করবে।
(১৭) জ্ঞান, বুদ্ধি ও ঈমান বৃদ্ধি পাবে।
(১৮) আল্লাহর ভালোবাসা অর্জিত হবে।
(১৯) আল্লাহর সাথে সাক্ষাত কামনা করবে।
(২০) তওবাহ করে পবিত্র জীবন-যাপনের উপরে সন্তুষ্ট থাকবে।
(২১) আল্লাহ তাকে এমন সুখ ও শান্তি দান করবেন, যা সে যখন পাপ কাজে লিপ্ত ছিলো তা থেকে বঞ্চিত ছিলো।

[আল-ফাওয়ায়েদ, পৃষ্ঠা: ২৫৫]
11👍2
👍4
কোন পরিস্থিতিতে সালাত আদায়কারী কিবলামুখী না হয়েও সালাত পড়তে পারবেন?
শাইখ ইবনে উসাইমীন রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন:
কিবলামুখী হওয়ার আবশ্যকতা থেকে তিনটি ক্ষেত্রে ছাড় রয়েছে —
1️⃣ ভয়:
যদি মানুষ শত্রুর কাছ থেকে পালিয়ে যায় অথবা যুদ্ধের ময়দানে থাকে আর কিবলামুখী থাকতে না পারে তবে সে যেদিকে মুখ করে থাকবে সেদিকেই নামাজ পড়বে।
2️⃣ অক্ষমতা:
যদি মানুষ অসুস্থ হয় এবং নিজে থেকে কিবলামুখী হতে না পারে, আর অন্য কেউ তাকে ঘুরিয়েও দিতে না পারে, তবে সে যেদিকে মুখ করে আছে সেদিকেই নামাজ পড়বে।
3️⃣ সফরে নফল সালাত:
মানুষ যদি গাড়ি, উট, জাহাজ বা বিমানে যাত্রা করে, তবে সে তার যাত্রাপথে যেদিকে থাকে সেদিকেই নফল সালাত পড়তে পারবে।
📖 আহকামুন মিনাল কুরআনিল কারীম, পৃষ্ঠা৫১৭-৫১৮।
7