৯। প্রতিশোধ: প্রাক্তনকে ভুলতে না পারার অন্যতম একটি কারণ হলো ব্রেকআপের পর অনেককে প্রতিশোধের নেশায় পেয়ে বসে। প্রতিশোধ নেবার চিন্তা দিনরাত প্রতিটি ক্ষণে তোমার মস্তিষ্কে তার চিন্তাকে জাগিয়ে রাখবে।
প্রতিশোধ নেবার চিন্তা মাথা থেকে একেবারেই ঝেড়ে ফেলতে হবে। এভাবে অন্য একজন মানুষের এবং তার পরিবারের ক্ষতি করা গুনাহ। এটা আল্লাহর অবাধ্য হওয়া। জেনে বুঝে এমন অবাধ্যতা করার সুযোগ নেই। এর পক্ষে কোনো অজুহাত দেওয়ারও সুযোগ নেই। প্রতিশোধ নেওয়ার অংশ হিসেবে যে কাজগুলো করতে হবে নিশ্চিতভাবেই তার অনেক কিছু হারাম। তুমি কেন হারাম কাজ করবে? আরেকজনের ক্ষতি করতে গিয়ে নিজের আখিরাত বরবাদ করবে? দুটো ভুল দিয়ে একটা শুদ্ধ হয় না। মাইনাসে মাইনাসে প্লাস শুধু অঙ্কের জগতে হয়, বাস্তবে হয় না।
যে উপায়গুলোর মাধ্যমে তাকে কষ্ট দিতে চাচ্ছো তা কি শুধু তাকেই কষ্ট দিচ্ছে? নাকি তার বাবা মা, তার ভাই বোন, স্বামী-স্ত্রী, পরিবার বা আত্মীয়স্বজনেরও ক্ষতির কারণ হচ্ছে? তাদের কী দোষ? তাছাড়া তুমি তোমার নিজের জন্যেও কবর খুঁড়ছো। নিজের জীবন, নিজের পরিবারকে শেষ করে দিচ্ছো। সামাজিক ও পুলিশি ঝামেলায় পড়াশোনা, ক্যারিয়ার, মানসম্মানের বারোটা বাজাচ্ছো। ছাড়ো এই প্রতিশোধ প্রতিশোধ খেলা। এই খেলার সবটুকু লেভেল কমপ্লিট করলেও তুমি কখনো শান্তি পাবে না। তৃপ্তি পাবে না।
যা হবার হয়ে গেছে। মেনে নাও। নিজের এবং অন্যের জীবন নষ্ট না করে জীবন গড়ো। হাইলি কোয়ালিফাইড, স্কিল্ড একজন মানুষ হও। ভীরুতা কাপুরুষতাকে গুলি মেরে আল্লাহর প্রকৃত দাস হয়ে যাও। সাহসী, চরিত্রবান, সৎ, পরোপকারী, সমাজ এবং জাতির প্রতি দায়িত্বশীল একজন মানুষ হবার চেষ্টা করো।
উপরের পয়েন্টগুলো ছাড়াও- ওর পেছনে লেগে থাকলে ও আবার আমার কাছে ফিরে আসবে, ব্রেকআপ মেনে নিলাম কিন্তু আমরা স্রেফ বন্ধু হয়ে থাকি -এসব চিন্তাভাবনাও প্রাক্তনকে ভুলতে না পারার পেছনের কারণ হিসেবে বেশ ভূমিকা রাখে।
এতক্ষণ যা যা আলোচনা করা হলো, সেগুলো প্রাক্তনকে ভুলতে না পারার পেছনের মূখ্য কারণ। এই কারণগুলোর সাথে সরাসরি তুমি জড়িত। কিন্তু এর বাইরেও প্রেমের ফাঁদ থেকে বের না হবার পরোক্ষ কিছু কারণ আছে যেগুলোতে তুমি সরাসরিভাবে জড়িত না। যেমন:
১। ব্রেকআপের পরে আবার নতুন করে প্রেমে পড়ার ফাঁদ: প্রথমবার প্রেমে পড়ে রিলেশন করাটা অনেকের জন্য কষ্টকর হলেও বা সময় লাগলেও, পরের প্রেমগুলোর ক্ষেত্রে খুব একটা সময় বা পরিশ্রম লাগে না। একেবারে সিরিয আকারে প্রেমলীলা চলতে থাকে। বিশেষ করে ব্রেকআপের পর। এর কারণ কী? অনেকগুলো কারণ আছে-
ব্রেকআপের পর একাকীত্ব সহ্য করতে না পারা, গাঞ্জুট্টি, হিরোইঞ্চির মতো প্রেমের নেশায় পড়ে যাওয়া। প্রেম ছাড়া নিজেকে পঙ্গু মনে হওয়া।
ব্রেকআপ হবার বা ঠিক এর পরের সময়টাতে ‘তুমিহীনতায়’ যে শূন্যতা কাজ করে সেই শূন্যতা পূরণের জন্য বিপরীত লিঙ্গের কাছ থেকে মেন্টাল সাপোর্ট নেওয়া।
প্রাক্তনের উপর প্রতিশোধ নেওয়া বা প্রাক্তনের মনে ঈর্ষা জাগানোর জন্য একটার পর একটা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া।
শরীরের চাহিদা পূরণ (সেক্স)।
দেখো, তুমি তো আল্লাহর জন্য, আল্লাহকে ভালোবেসে, তাঁর অসন্তুষ্টির ভয়ে, প্রেম থেকে দূরে সরে এসেছো। আবার কেন অন্ধকারের জীবনটাতে ফেরত যেতে চাচ্ছো? জাহান্নামের পথ ধরছো? আল্লাহর সন্তুষ্টির চাইতে, জান্নাতের চাইতে তোমার কাছে ক্ষণিকের এই ডোপামিনের নেশা বেশি হয়ে গেল? প্রেমের কারণে এতোটা কষ্ট পেলে তুমি, এতোটা অশ্রু ঝরলো তোমার চোখে… তারপরও কেন আবার সেই প্রেমের ফাঁদেই পা দেওয়া? বিয়ে করার চেষ্টা করা, আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করা, যিকির করা, বাবা-মা’র সাথে সময় কাটানো ইত্যাদি নানা পদ্ধতি বাতলে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো পড়ে নাও।
মেন্টাল সাপোর্ট এর জন্য কখনোই বিপরীত লিঙ্গের কাছে যাবে না। ওরা তোমাকে হেল্প তো করতে পারবেই না, উল্টো আবার মরণফাঁদে পড়ে যাবে। খুব ভালো হয় একজন দ্বীনদার মনোবিদের কাছে যেতে পারলে। না পারলে তোমার বন্ধু (মেয়েদের ক্ষেত্রে বান্ধবী), বড় ভাই, কাযিন, নিকটাত্মীয় এবং এলাকার মধ্যে মুরুব্বীস্থানীয় কেউ (যাদের সাথে তুমি ফ্রি, যারা সৎ, যারা তোমার ভালো চায়), তোমার ফেভারিট স্যার (মেয়েদের জন্য ম্যাডাম), আলেম-উলামার কাছে যেতে পারো। চাইলে আমাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারো।
.
প্রবন্ধ: যদি মন কাঁদে [ত্রয়োদশ পর্ব]
বই: আকাশের ওপারে আকাশ
লেখক: লস্ট মডেস্টি টিম
সম্পাদক: আসিফ আদনান
#আকাশের_ওপারে_আকাশ
#LostModesty
.
.
রেফারেন্স কমেন্টে....
রেফারেন্স:
[১] ইমেইল – lostmodesty@gmail.com ফেইসবুক-
www.facebook.com/lostmodesty
প্রতিশোধ নেবার চিন্তা মাথা থেকে একেবারেই ঝেড়ে ফেলতে হবে। এভাবে অন্য একজন মানুষের এবং তার পরিবারের ক্ষতি করা গুনাহ। এটা আল্লাহর অবাধ্য হওয়া। জেনে বুঝে এমন অবাধ্যতা করার সুযোগ নেই। এর পক্ষে কোনো অজুহাত দেওয়ারও সুযোগ নেই। প্রতিশোধ নেওয়ার অংশ হিসেবে যে কাজগুলো করতে হবে নিশ্চিতভাবেই তার অনেক কিছু হারাম। তুমি কেন হারাম কাজ করবে? আরেকজনের ক্ষতি করতে গিয়ে নিজের আখিরাত বরবাদ করবে? দুটো ভুল দিয়ে একটা শুদ্ধ হয় না। মাইনাসে মাইনাসে প্লাস শুধু অঙ্কের জগতে হয়, বাস্তবে হয় না।
যে উপায়গুলোর মাধ্যমে তাকে কষ্ট দিতে চাচ্ছো তা কি শুধু তাকেই কষ্ট দিচ্ছে? নাকি তার বাবা মা, তার ভাই বোন, স্বামী-স্ত্রী, পরিবার বা আত্মীয়স্বজনেরও ক্ষতির কারণ হচ্ছে? তাদের কী দোষ? তাছাড়া তুমি তোমার নিজের জন্যেও কবর খুঁড়ছো। নিজের জীবন, নিজের পরিবারকে শেষ করে দিচ্ছো। সামাজিক ও পুলিশি ঝামেলায় পড়াশোনা, ক্যারিয়ার, মানসম্মানের বারোটা বাজাচ্ছো। ছাড়ো এই প্রতিশোধ প্রতিশোধ খেলা। এই খেলার সবটুকু লেভেল কমপ্লিট করলেও তুমি কখনো শান্তি পাবে না। তৃপ্তি পাবে না।
যা হবার হয়ে গেছে। মেনে নাও। নিজের এবং অন্যের জীবন নষ্ট না করে জীবন গড়ো। হাইলি কোয়ালিফাইড, স্কিল্ড একজন মানুষ হও। ভীরুতা কাপুরুষতাকে গুলি মেরে আল্লাহর প্রকৃত দাস হয়ে যাও। সাহসী, চরিত্রবান, সৎ, পরোপকারী, সমাজ এবং জাতির প্রতি দায়িত্বশীল একজন মানুষ হবার চেষ্টা করো।
উপরের পয়েন্টগুলো ছাড়াও- ওর পেছনে লেগে থাকলে ও আবার আমার কাছে ফিরে আসবে, ব্রেকআপ মেনে নিলাম কিন্তু আমরা স্রেফ বন্ধু হয়ে থাকি -এসব চিন্তাভাবনাও প্রাক্তনকে ভুলতে না পারার পেছনের কারণ হিসেবে বেশ ভূমিকা রাখে।
এতক্ষণ যা যা আলোচনা করা হলো, সেগুলো প্রাক্তনকে ভুলতে না পারার পেছনের মূখ্য কারণ। এই কারণগুলোর সাথে সরাসরি তুমি জড়িত। কিন্তু এর বাইরেও প্রেমের ফাঁদ থেকে বের না হবার পরোক্ষ কিছু কারণ আছে যেগুলোতে তুমি সরাসরিভাবে জড়িত না। যেমন:
১। ব্রেকআপের পরে আবার নতুন করে প্রেমে পড়ার ফাঁদ: প্রথমবার প্রেমে পড়ে রিলেশন করাটা অনেকের জন্য কষ্টকর হলেও বা সময় লাগলেও, পরের প্রেমগুলোর ক্ষেত্রে খুব একটা সময় বা পরিশ্রম লাগে না। একেবারে সিরিয আকারে প্রেমলীলা চলতে থাকে। বিশেষ করে ব্রেকআপের পর। এর কারণ কী? অনেকগুলো কারণ আছে-
ব্রেকআপের পর একাকীত্ব সহ্য করতে না পারা, গাঞ্জুট্টি, হিরোইঞ্চির মতো প্রেমের নেশায় পড়ে যাওয়া। প্রেম ছাড়া নিজেকে পঙ্গু মনে হওয়া।
ব্রেকআপ হবার বা ঠিক এর পরের সময়টাতে ‘তুমিহীনতায়’ যে শূন্যতা কাজ করে সেই শূন্যতা পূরণের জন্য বিপরীত লিঙ্গের কাছ থেকে মেন্টাল সাপোর্ট নেওয়া।
প্রাক্তনের উপর প্রতিশোধ নেওয়া বা প্রাক্তনের মনে ঈর্ষা জাগানোর জন্য একটার পর একটা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া।
শরীরের চাহিদা পূরণ (সেক্স)।
দেখো, তুমি তো আল্লাহর জন্য, আল্লাহকে ভালোবেসে, তাঁর অসন্তুষ্টির ভয়ে, প্রেম থেকে দূরে সরে এসেছো। আবার কেন অন্ধকারের জীবনটাতে ফেরত যেতে চাচ্ছো? জাহান্নামের পথ ধরছো? আল্লাহর সন্তুষ্টির চাইতে, জান্নাতের চাইতে তোমার কাছে ক্ষণিকের এই ডোপামিনের নেশা বেশি হয়ে গেল? প্রেমের কারণে এতোটা কষ্ট পেলে তুমি, এতোটা অশ্রু ঝরলো তোমার চোখে… তারপরও কেন আবার সেই প্রেমের ফাঁদেই পা দেওয়া? বিয়ে করার চেষ্টা করা, আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করা, যিকির করা, বাবা-মা’র সাথে সময় কাটানো ইত্যাদি নানা পদ্ধতি বাতলে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো পড়ে নাও।
মেন্টাল সাপোর্ট এর জন্য কখনোই বিপরীত লিঙ্গের কাছে যাবে না। ওরা তোমাকে হেল্প তো করতে পারবেই না, উল্টো আবার মরণফাঁদে পড়ে যাবে। খুব ভালো হয় একজন দ্বীনদার মনোবিদের কাছে যেতে পারলে। না পারলে তোমার বন্ধু (মেয়েদের ক্ষেত্রে বান্ধবী), বড় ভাই, কাযিন, নিকটাত্মীয় এবং এলাকার মধ্যে মুরুব্বীস্থানীয় কেউ (যাদের সাথে তুমি ফ্রি, যারা সৎ, যারা তোমার ভালো চায়), তোমার ফেভারিট স্যার (মেয়েদের জন্য ম্যাডাম), আলেম-উলামার কাছে যেতে পারো। চাইলে আমাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারো।
.
প্রবন্ধ: যদি মন কাঁদে [ত্রয়োদশ পর্ব]
বই: আকাশের ওপারে আকাশ
লেখক: লস্ট মডেস্টি টিম
সম্পাদক: আসিফ আদনান
#আকাশের_ওপারে_আকাশ
#LostModesty
.
.
রেফারেন্স কমেন্টে....
রেফারেন্স:
[১] ইমেইল – lostmodesty@gmail.com ফেইসবুক-
www.facebook.com/lostmodesty
Facebook
Log in or sign up to view
See posts, photos and more on Facebook.
Forwarded from ষোলো
রহস্যময় ভূতের গল্প লিখতে পারো? পাঠিয়ে দাও আমাদের ইমেইলে। তুমিও হয়ে যেতে পারো ষোলো ৮ম সংখ্যার একজন লেখক বা লেখিকা!
লেখা পাঠানোর ঠিকানা - editor.sholo@gmail.com
লেখা পাঠানোর ঠিকানা - editor.sholo@gmail.com
আজ বসব কাল বসব করে করে আর পড়তে বসা হয় না। বা পড়তে বসা হলেও কোনো নির্দিষ্ট বিষয়, বাড়ির কাজ আর শুরু করা হয়ে উঠে না। আলসেমি লাগে। ভয় লাগে। গা ম্যাজ ম্যাজ করে, ভালো লাগে না। এরকম অলসতা আমার অনেক হতো। এখনো হয়। বেশ ভালো রকমের খারাপ অভ্যাস এটা। এর জন্য লাইফে অনেক কিছু হারাতে হয়। পস্তাতে হয়। আমার জীবনে যা আমি হাড়ে হাড়ে বুঝছি। তোমরা যেন এই কষ্টটা না করো তা নিয়ে আমাদের এই ধারাবাহিক আয়োজন। গত পর্বে আমরা দেখেছিলাম কিছু ফাঁদ, যার জন্য এমন হয়। আজকে থেকে আমরা আলোচনা করব এই ফাঁদগুলো থেকে বাঁচার বিভিন্ন কলাকৌশল।
★কাজকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করো ও নিজেকে পুরস্কার দাও (Solar Flaring Technique)
• কাজ একটু কঠিন হলে আমরা কাজ শুরু করার ক্ষেত্রে একটা মানসিক বাধা অনুভব করি। আরে বাপরে, কাজটা অনেক কঠিন অনেক বড়, অনেক সময় লাগবে, অনেক কষ্ট করা লাগবে—এই ভাবনা থেকে আমরা কোনো কাজ শুরু করার উৎসাহ হারিয়ে ফেলি।
• তাই কাজকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করো। এত ছোট, যা করতে তেমন কষ্ট হয় না।
• এখন শুধু এই ছোট কাজটাই করতে হবে, এটাই তোমার চূড়ান্ত লক্ষ্য এমন ভাবো।
• একটা ছোট অংশ করে ফেললে দেখবে, ভালো লাগবে। পরের ছোট অংশ করার আগ্রহ পাবে। একটা ছোট অংশ করে ফেলার পর নিজেকে কিছু পুরস্কার দিতে পারো। যেমন- যেটা খেতে পছন্দ করো সেটা খেলে, ১০ মিনিট একটু খেললে এমন। তবে সব সময় নিজেকে পুরস্কার দিবে না। তাহলে ব্রেইন পুরস্কারের লোভে পড়ে যাবে। পরে পুরস্কার দিতে না পারলে বা পুরস্কার নেই এমন কোনো কাজ সে আর করতে চাইবে না।
.
যেমন ধরো, তোমার গণিত বইয়ের এক চ্যাপ্টারে ১০টা অংক হোমওয়ার্ক দিয়েছে। তোমার ১টা অংক করতেও ইচ্ছা করছে না। তুমি কাজগুলো ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নাও এভাবে—
১। খাতা-কলম ক্যালকুলেটর নিয়ে টেবিলে বসব।
২। ফোন অফ করে দূরে রাখব।
৩। গণিত বই বের করে প্রথম অংকটা একবার রিডিং পড়ব।
৪। প্রশ্নে দেওয়া প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো খাতায় লিখব।
৫। দুই লাইন অংক করব…
.
আশা করি সিস্টেম ধরতে পেরেছ। এভাবে করে দেখো। কাজে অলসতা আসবে না ইনশাআল্লাহ।
★৫ মিনিট রুল
•কোনো কাজ এখন/আজকে শুরু করতে ভালো লাগছে না, হাতে সময় নেই, অনেক কাজ আছে…। ঠিক আছে, আজকে পুরোটা কাজ করবে না, শুধু ৫ মিনিট কাজ করবে। ৫ মিনিট কাজ করার সময় তো তোমার আছে, তাই না? আর ৫ মিনিট কাজ করলে কীই-বা এমন কষ্ট হয়!
•৫ মিনিট কাজ করতে না পারলেও কাজটা নিয়ে জাস্ট বসে থাকবে। ৫ মিনিট কাজ নিয়ে বসে থাকলেই দেখবে আরও অনেকক্ষণ কাজ করতে পারবে। আসলে অলসতা করে করে কাজ না করার ফলে আমাদের মাঝে একটা জড়তা চলে আসে। আমরা এই জড়তা বা স্থিতিশীল অবস্থা ভেঙে গতিশীল হতে চাই না। ৫ মিনিটের এই অল্প কাজও আমাদের এই জড়তা ভেঙে দিয়ে গতিশীল করে তুলতে সাহায্য করে।
•এই নিয়ম অনুসরণ করলে খুব কঠিন কাজও শুরু করে ফেলতে পারবে ইনশাআল্লাহ। রিসার্চ দ্বারা প্রমাণিত যে, মানুষ এভাবে সাধারণত কোনো কাজ শুরু করলে তা শেষ করে ফেলতে চায়। কাজ শুরুর পূর্বে হয়তো মনে হচ্ছিল এই কাজটা খুবই বিরক্তিকর, কষ্টদায়ক কিছু একটা হবে। কিন্তু কাজ শুরুর পর মানুষ মজা পেতে শুরু করে। আফসোস করে, ইশ! আজ করব কাল করব এমন না করে আমি কেন আগে কাজটা শুরু করলাম না!
★এই কাজ করব, নইলে কিছুই করব না
•ঘড়িতে টাইমার অন করো। ৩০ মিনিট বা ৪০ মিনিটের একটা টাইমার সেট করো।
•এ সময় যে কাজে তোমার অলসতা হয়, নির্দিষ্ট সে কাজটি করবে অথবা আর কোনো কিছুই করবে না। ফোন চাপাচাপি করবে না। কারও সাথে গল্প করবে না। কথা বলবে না। মানে কিছুই না… স্রেফ বসে থাকবে, জায়গা ছেড়ে উঠবেও না।
•দেখবে, যতই মন না চাক, কাজ করতে ভালো না লাগুক, কিছুক্ষণ পর তুমি কাজ করা শুরু করেছ।
.
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। সামনের পর্বে ইনশাআল্লাহ আরও অনেক নতুন নতুন টিপস নিয়ে হাজির হব।
সেলফ হেল্প: দ্যা আর্ট অফ অলসতা (২য় পর্ব)
-আব্দুল্লাহ আব্দুর রহমান
.
[ষোলো ৭ম সংখ্যা থেকে নেওয়া, পাওয়া যাচ্ছে সারাদেশে।অর্ডার লিংক কমেন্টে]
.
#ষোলো
#ষোলোর_পাতা_থেকে
★কাজকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করো ও নিজেকে পুরস্কার দাও (Solar Flaring Technique)
• কাজ একটু কঠিন হলে আমরা কাজ শুরু করার ক্ষেত্রে একটা মানসিক বাধা অনুভব করি। আরে বাপরে, কাজটা অনেক কঠিন অনেক বড়, অনেক সময় লাগবে, অনেক কষ্ট করা লাগবে—এই ভাবনা থেকে আমরা কোনো কাজ শুরু করার উৎসাহ হারিয়ে ফেলি।
• তাই কাজকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করো। এত ছোট, যা করতে তেমন কষ্ট হয় না।
• এখন শুধু এই ছোট কাজটাই করতে হবে, এটাই তোমার চূড়ান্ত লক্ষ্য এমন ভাবো।
• একটা ছোট অংশ করে ফেললে দেখবে, ভালো লাগবে। পরের ছোট অংশ করার আগ্রহ পাবে। একটা ছোট অংশ করে ফেলার পর নিজেকে কিছু পুরস্কার দিতে পারো। যেমন- যেটা খেতে পছন্দ করো সেটা খেলে, ১০ মিনিট একটু খেললে এমন। তবে সব সময় নিজেকে পুরস্কার দিবে না। তাহলে ব্রেইন পুরস্কারের লোভে পড়ে যাবে। পরে পুরস্কার দিতে না পারলে বা পুরস্কার নেই এমন কোনো কাজ সে আর করতে চাইবে না।
.
যেমন ধরো, তোমার গণিত বইয়ের এক চ্যাপ্টারে ১০টা অংক হোমওয়ার্ক দিয়েছে। তোমার ১টা অংক করতেও ইচ্ছা করছে না। তুমি কাজগুলো ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নাও এভাবে—
১। খাতা-কলম ক্যালকুলেটর নিয়ে টেবিলে বসব।
২। ফোন অফ করে দূরে রাখব।
৩। গণিত বই বের করে প্রথম অংকটা একবার রিডিং পড়ব।
৪। প্রশ্নে দেওয়া প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো খাতায় লিখব।
৫। দুই লাইন অংক করব…
.
আশা করি সিস্টেম ধরতে পেরেছ। এভাবে করে দেখো। কাজে অলসতা আসবে না ইনশাআল্লাহ।
★৫ মিনিট রুল
•কোনো কাজ এখন/আজকে শুরু করতে ভালো লাগছে না, হাতে সময় নেই, অনেক কাজ আছে…। ঠিক আছে, আজকে পুরোটা কাজ করবে না, শুধু ৫ মিনিট কাজ করবে। ৫ মিনিট কাজ করার সময় তো তোমার আছে, তাই না? আর ৫ মিনিট কাজ করলে কীই-বা এমন কষ্ট হয়!
•৫ মিনিট কাজ করতে না পারলেও কাজটা নিয়ে জাস্ট বসে থাকবে। ৫ মিনিট কাজ নিয়ে বসে থাকলেই দেখবে আরও অনেকক্ষণ কাজ করতে পারবে। আসলে অলসতা করে করে কাজ না করার ফলে আমাদের মাঝে একটা জড়তা চলে আসে। আমরা এই জড়তা বা স্থিতিশীল অবস্থা ভেঙে গতিশীল হতে চাই না। ৫ মিনিটের এই অল্প কাজও আমাদের এই জড়তা ভেঙে দিয়ে গতিশীল করে তুলতে সাহায্য করে।
•এই নিয়ম অনুসরণ করলে খুব কঠিন কাজও শুরু করে ফেলতে পারবে ইনশাআল্লাহ। রিসার্চ দ্বারা প্রমাণিত যে, মানুষ এভাবে সাধারণত কোনো কাজ শুরু করলে তা শেষ করে ফেলতে চায়। কাজ শুরুর পূর্বে হয়তো মনে হচ্ছিল এই কাজটা খুবই বিরক্তিকর, কষ্টদায়ক কিছু একটা হবে। কিন্তু কাজ শুরুর পর মানুষ মজা পেতে শুরু করে। আফসোস করে, ইশ! আজ করব কাল করব এমন না করে আমি কেন আগে কাজটা শুরু করলাম না!
★এই কাজ করব, নইলে কিছুই করব না
•ঘড়িতে টাইমার অন করো। ৩০ মিনিট বা ৪০ মিনিটের একটা টাইমার সেট করো।
•এ সময় যে কাজে তোমার অলসতা হয়, নির্দিষ্ট সে কাজটি করবে অথবা আর কোনো কিছুই করবে না। ফোন চাপাচাপি করবে না। কারও সাথে গল্প করবে না। কথা বলবে না। মানে কিছুই না… স্রেফ বসে থাকবে, জায়গা ছেড়ে উঠবেও না।
•দেখবে, যতই মন না চাক, কাজ করতে ভালো না লাগুক, কিছুক্ষণ পর তুমি কাজ করা শুরু করেছ।
.
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। সামনের পর্বে ইনশাআল্লাহ আরও অনেক নতুন নতুন টিপস নিয়ে হাজির হব।
সেলফ হেল্প: দ্যা আর্ট অফ অলসতা (২য় পর্ব)
-আব্দুল্লাহ আব্দুর রহমান
.
[ষোলো ৭ম সংখ্যা থেকে নেওয়া, পাওয়া যাচ্ছে সারাদেশে।অর্ডার লিংক কমেন্টে]
.
#ষোলো
#ষোলোর_পাতা_থেকে
এই স্বাধীনতা চেয়েছিলে বুঝি? ভালোবাসার প্রতিদান বুঝি এভাবে দিতে হয়? বহুতল ভবনের ফুটপাতে মুখ গুঁজে পড়ে থাকা, থ্যাঁতলানো শরীর, খুলি ফেটে চৌচির, মগজ এদিকসেদিক ছড়ানো?
.
পাখির মতো উড়তে ইচ্ছে করত তোমার, ভালোবাসতে ঐ নীল আকাশ আর একদুপুর স্বাধীনতা। দশতলা ভবনের ছাদ থেকে লাফ দিয়েছিলে যখন, তখনো কি ভালোবেসেছিলে ঐ আকাশ? মিটেছিল কি ডানা মেলে উড়বার সাধ?
.
শুরুটা হয়েছিল ফাগুনের দিনে। কী ছিল না সেদিন? প্রহর শেষের রাঙা আলো, বাতাসে মাতাল সুবাস। প্রেমে পড়ার জন্য এরচেয়ে উপযুক্ত দিন আর হয় না। প্রেমে পড়লে তুমি। প্রেমে পড়লে প্রথম এবং শেষবারের মতো। সেদিন কেউ কি জানত মায়াবী এই ফাগুনের ক্ষণ কী কাল হয়ে দাঁড়াবে তোমার জন্য?
এরও কিছুদিন আগে সেই বহু কাঙ্ক্ষিত বাইক তোমাকে কিনে দেওয়া হলো। বাইকের জন্য কত পাগলামিই না তুমি করেছ! দিনের পর দিন ভাত খাওনি, মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছ, ভাইয়া যখন বোঝাতে গিয়েছে, ‘আরেকটু বড় হ! তারপর বাবা তোকে বাইক কিনে দেবেন। বাবার ওপর এখনি অত চাপ দিস না। টানাটানির সংসার…’, ভাইয়াকে নিজের চরকায় তেল দিতে বলেছ তুমি। বাবার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে রেখেছিলে।
.
বাইকের পেছনে তোমার জানের জিগরি দোস্তকে বসিয়ে রাউন্ড দিচ্ছিলে তুমি সেদিন। হঠাৎ করেই তোমার চোখ পড়ল তার ওপর; তোমার হলুদ বসন্ত পাখি। কলেজের ইউনিফর্ম পরা। ওড়নাটা প্যাঁচ লেগেছে রিকশার হুডের সঙ্গে। সে আপ্রাণ চেষ্টা করছে প্যাঁচ খোলার, কিন্তু প্যাঁচ খুলছে না। ছোটখাটো একটা জ্যামের সৃষ্টি হয়েছে। রিকশার টুংটাং, সিএনজির হর্ন তাড়া দিচ্ছে। সে একবার প্যাঁচ খোলার চেষ্টা করে, আরেকবার জ্যামের দিকে চেয়ে বিব্রত হাসি দেয়। সেই হাসি দেখে তোমার একটা হার্টবিট মিস হলো। তুমি প্রেমে পড়লে!
.
তাহসান গান আর নাটকে তোমাকে প্রেম করা শেখালো। আরও কত কিছু শিখলে তুমি! রাত জেগে ফোনে কথা বলা, বাবার পকেট কাটা, মায়ের কাছে মিথ্যে বলা, ক্লাস ফাঁকি দেওয়া। হাল ফ্যাশনের হেয়ারকাট, ছেঁড়া জিন্স, হাতে বালা—পুরুষ হতে চাইবার তোমার কত চেষ্টা! হররোজ তোমার হলুদ বসন্ত পাখিকে বাইকের পেছনে বসিয়ে স্পিডোমিটারের কাটা ছোঁয়াতে লাগলে তুমি নব্বইয়ের ঘরে। ভাবতে লাগলে, ‘জীবন তো এটাই, এই তো স্বাধীনতা, এই তো দু’ডানা মেলে আকাশে উড়া, এই তো হলুদ বসন্ত সুখ!’
.
এরপর আসলো রুদ্রঝড়। সেই ঝড়ে অচিন হয়ে গেল তোমার হলুদ বসন্ত পাখি। একদিন তোমার যে হাত তুমি রাখতে চেয়েছিলে আরেকটা নরম মেহেদিরাঙা হাতের ওপর, তোমার শীতার্ত হৃদয় ভালোবাসার উষ্ণতা শুষে নিতে চেয়েছিল, সেই হাতেই তুমি খুলতে শুরু করলে ফেন্সিডিলের বোতল। গাঁজা, হিরোইন কিছুই বাদ দিলে না। চুলে জট বাঁধল, তোমার গা দিয়ে দুর্গন্ধ বের হতে লাগল। আজীবন ফার্স্ট হয়ে আসা তুমি ফেইল করলে এক সাবজেক্টে। তোমার বাবা অফিসে হাড়ভাঙ্গা খাটুনি খেটেও রাতে ঘুমাতে পারেন না তোমার চিন্তায়। ভাবেন, ‘কী ভুল ছিল আমার?’ মা নীরবে চোখের পানি ফেলেন। আহা! জনমদুঃখিনী মা।
.
তারপর যেদিন তুমি শুনলে, তোমার হলুদ বসন্ত পাখি এক বাজপাখির সঙ্গে উড়াল দিয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ায়, সেদিন কঠিন সে সিদ্ধান্তটা নিলে তুমি। গাঁজার কল্কিতে শেষ সুখটান দিলে। তারপর একে একে সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসলে দশতালার ছাদে। পাখির মতো মেলে ধরলে দু’ হাত। তোমার সামনে ইট, কাঠ, পাথরের এক শহুরে আকাশ আর এক শহুরে মুক্তি। চিরকুটটা চাপা পড়ে রইল এস্ট্রের নিচে—ভালোবাসার জন্য আমি এই জীবন বিসর্জন দিলাম!
.
তোমাদের পরিবারের সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের দিনগুলো মনে পড়ে খুব। আম্মা একদিন সন্ধ্যায় এসে বলল, ‘পাশের বাসায় নতুন ভাড়াটিয়া এসেছে। ওদের দুইটা ছেলে আছে। বড়টা তোর বয়সীই হবে। পরিচিত হয়ে নিস।’
.
তোমার ভাই নাহিদের সঙ্গে সেদিন রাতেই মোড়ের চায়ের দোকানে পরিচয় হয়ে গেল। পরিচয় হবার দশ মিনিটের মধ্যেই সে দুম করে আমার কাছে টিউশনি চেয়ে বসল। আমি অবাক হলাম; বুঝলাম, তোমাদের সংসার টানাটানির। তোমার বাবার বোঝা কিছুটা হলেও হালকা করতে চায়। একমাথা কোঁকড়ানো চুল, মোটা কালো ফ্রেমের চশমা আর মলিন, পুরোনো পাঞ্জাবি পরা সহজ-সরল ছেলেটাকে আমার এক নিমিষেই ভালো লেগে গিয়েছিল। কেন জানি তখন নিজেকে অনেক ছোট মনে হলো। আমার বয়সী একটা ছেলে এত কষ্ট করছে, আর আমি গায়ে বাতাস লাগিয়ে ঘুরাফেরা করে বাপের অন্ন ধ্বংস করছি। একটু বড় হতে মন চাইল। আমার একমাত্র টিউশনিটা দিয়ে দিলাম তোমার ভাইকে। কয়দিন পরে অবশ্য ঠিকই একটা টিউশনি পেয়ে গিয়েছিলাম, আগেরটার চেয়ে ভালো। এই আত্মভোলা মানুষটা তোমাকে কতটা ভালোবাসতো তুমি কোনোদিন বুঝোনি।
.
প্রায়দিনই ‘এত সকালে খিদে নেই’ বলে প্রচণ্ড খিদে নিয়ে সে বাসা থেকে বের হয়ে টিউশনিতে যেত। সকালের দুটো রুটির সঙ্গে ডিমভাজির পুরোটাই যেন তুমি পাও, এজন্যেই সে এই অভিনয়টুকু করত। রোজ বুধবার দুপুরের পর ক্লাবের মিটিংয়ে কেক, মিষ্টি আর কলা দিত। সে ব্যাগে লুকিয়ে সেগুলো তোমার জন্য নিয়ে আসতো। তুমি খেতে তার সামনে বসে, এতেই তার খাওয়া হয়ে যেত।
.
পাখির মতো উড়তে ইচ্ছে করত তোমার, ভালোবাসতে ঐ নীল আকাশ আর একদুপুর স্বাধীনতা। দশতলা ভবনের ছাদ থেকে লাফ দিয়েছিলে যখন, তখনো কি ভালোবেসেছিলে ঐ আকাশ? মিটেছিল কি ডানা মেলে উড়বার সাধ?
.
শুরুটা হয়েছিল ফাগুনের দিনে। কী ছিল না সেদিন? প্রহর শেষের রাঙা আলো, বাতাসে মাতাল সুবাস। প্রেমে পড়ার জন্য এরচেয়ে উপযুক্ত দিন আর হয় না। প্রেমে পড়লে তুমি। প্রেমে পড়লে প্রথম এবং শেষবারের মতো। সেদিন কেউ কি জানত মায়াবী এই ফাগুনের ক্ষণ কী কাল হয়ে দাঁড়াবে তোমার জন্য?
এরও কিছুদিন আগে সেই বহু কাঙ্ক্ষিত বাইক তোমাকে কিনে দেওয়া হলো। বাইকের জন্য কত পাগলামিই না তুমি করেছ! দিনের পর দিন ভাত খাওনি, মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছ, ভাইয়া যখন বোঝাতে গিয়েছে, ‘আরেকটু বড় হ! তারপর বাবা তোকে বাইক কিনে দেবেন। বাবার ওপর এখনি অত চাপ দিস না। টানাটানির সংসার…’, ভাইয়াকে নিজের চরকায় তেল দিতে বলেছ তুমি। বাবার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে রেখেছিলে।
.
বাইকের পেছনে তোমার জানের জিগরি দোস্তকে বসিয়ে রাউন্ড দিচ্ছিলে তুমি সেদিন। হঠাৎ করেই তোমার চোখ পড়ল তার ওপর; তোমার হলুদ বসন্ত পাখি। কলেজের ইউনিফর্ম পরা। ওড়নাটা প্যাঁচ লেগেছে রিকশার হুডের সঙ্গে। সে আপ্রাণ চেষ্টা করছে প্যাঁচ খোলার, কিন্তু প্যাঁচ খুলছে না। ছোটখাটো একটা জ্যামের সৃষ্টি হয়েছে। রিকশার টুংটাং, সিএনজির হর্ন তাড়া দিচ্ছে। সে একবার প্যাঁচ খোলার চেষ্টা করে, আরেকবার জ্যামের দিকে চেয়ে বিব্রত হাসি দেয়। সেই হাসি দেখে তোমার একটা হার্টবিট মিস হলো। তুমি প্রেমে পড়লে!
.
তাহসান গান আর নাটকে তোমাকে প্রেম করা শেখালো। আরও কত কিছু শিখলে তুমি! রাত জেগে ফোনে কথা বলা, বাবার পকেট কাটা, মায়ের কাছে মিথ্যে বলা, ক্লাস ফাঁকি দেওয়া। হাল ফ্যাশনের হেয়ারকাট, ছেঁড়া জিন্স, হাতে বালা—পুরুষ হতে চাইবার তোমার কত চেষ্টা! হররোজ তোমার হলুদ বসন্ত পাখিকে বাইকের পেছনে বসিয়ে স্পিডোমিটারের কাটা ছোঁয়াতে লাগলে তুমি নব্বইয়ের ঘরে। ভাবতে লাগলে, ‘জীবন তো এটাই, এই তো স্বাধীনতা, এই তো দু’ডানা মেলে আকাশে উড়া, এই তো হলুদ বসন্ত সুখ!’
.
এরপর আসলো রুদ্রঝড়। সেই ঝড়ে অচিন হয়ে গেল তোমার হলুদ বসন্ত পাখি। একদিন তোমার যে হাত তুমি রাখতে চেয়েছিলে আরেকটা নরম মেহেদিরাঙা হাতের ওপর, তোমার শীতার্ত হৃদয় ভালোবাসার উষ্ণতা শুষে নিতে চেয়েছিল, সেই হাতেই তুমি খুলতে শুরু করলে ফেন্সিডিলের বোতল। গাঁজা, হিরোইন কিছুই বাদ দিলে না। চুলে জট বাঁধল, তোমার গা দিয়ে দুর্গন্ধ বের হতে লাগল। আজীবন ফার্স্ট হয়ে আসা তুমি ফেইল করলে এক সাবজেক্টে। তোমার বাবা অফিসে হাড়ভাঙ্গা খাটুনি খেটেও রাতে ঘুমাতে পারেন না তোমার চিন্তায়। ভাবেন, ‘কী ভুল ছিল আমার?’ মা নীরবে চোখের পানি ফেলেন। আহা! জনমদুঃখিনী মা।
.
তারপর যেদিন তুমি শুনলে, তোমার হলুদ বসন্ত পাখি এক বাজপাখির সঙ্গে উড়াল দিয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ায়, সেদিন কঠিন সে সিদ্ধান্তটা নিলে তুমি। গাঁজার কল্কিতে শেষ সুখটান দিলে। তারপর একে একে সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসলে দশতালার ছাদে। পাখির মতো মেলে ধরলে দু’ হাত। তোমার সামনে ইট, কাঠ, পাথরের এক শহুরে আকাশ আর এক শহুরে মুক্তি। চিরকুটটা চাপা পড়ে রইল এস্ট্রের নিচে—ভালোবাসার জন্য আমি এই জীবন বিসর্জন দিলাম!
.
তোমাদের পরিবারের সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের দিনগুলো মনে পড়ে খুব। আম্মা একদিন সন্ধ্যায় এসে বলল, ‘পাশের বাসায় নতুন ভাড়াটিয়া এসেছে। ওদের দুইটা ছেলে আছে। বড়টা তোর বয়সীই হবে। পরিচিত হয়ে নিস।’
.
তোমার ভাই নাহিদের সঙ্গে সেদিন রাতেই মোড়ের চায়ের দোকানে পরিচয় হয়ে গেল। পরিচয় হবার দশ মিনিটের মধ্যেই সে দুম করে আমার কাছে টিউশনি চেয়ে বসল। আমি অবাক হলাম; বুঝলাম, তোমাদের সংসার টানাটানির। তোমার বাবার বোঝা কিছুটা হলেও হালকা করতে চায়। একমাথা কোঁকড়ানো চুল, মোটা কালো ফ্রেমের চশমা আর মলিন, পুরোনো পাঞ্জাবি পরা সহজ-সরল ছেলেটাকে আমার এক নিমিষেই ভালো লেগে গিয়েছিল। কেন জানি তখন নিজেকে অনেক ছোট মনে হলো। আমার বয়সী একটা ছেলে এত কষ্ট করছে, আর আমি গায়ে বাতাস লাগিয়ে ঘুরাফেরা করে বাপের অন্ন ধ্বংস করছি। একটু বড় হতে মন চাইল। আমার একমাত্র টিউশনিটা দিয়ে দিলাম তোমার ভাইকে। কয়দিন পরে অবশ্য ঠিকই একটা টিউশনি পেয়ে গিয়েছিলাম, আগেরটার চেয়ে ভালো। এই আত্মভোলা মানুষটা তোমাকে কতটা ভালোবাসতো তুমি কোনোদিন বুঝোনি।
.
প্রায়দিনই ‘এত সকালে খিদে নেই’ বলে প্রচণ্ড খিদে নিয়ে সে বাসা থেকে বের হয়ে টিউশনিতে যেত। সকালের দুটো রুটির সঙ্গে ডিমভাজির পুরোটাই যেন তুমি পাও, এজন্যেই সে এই অভিনয়টুকু করত। রোজ বুধবার দুপুরের পর ক্লাবের মিটিংয়ে কেক, মিষ্টি আর কলা দিত। সে ব্যাগে লুকিয়ে সেগুলো তোমার জন্য নিয়ে আসতো। তুমি খেতে তার সামনে বসে, এতেই তার খাওয়া হয়ে যেত।
.
তুমি তখন ক্লাস নাইনে পড়ো। তোমার সহপাঠী গালিবকে তার বিলাতফেরত ভাই শিয়ালকোটের ক্রিকেট ব্যাট কিনে দিয়েছিল। খেলার মাঠে গালিবের হাতে সেই ব্যাট দেখে তোমার ঐরকম একটা ব্যাট কেনার ইচ্ছে হলো। সাহস করে বাবাকে বলতে পারলে না। বললে তোমার ভাইকে, ‘ভাইয়া, একটা ব্যাট কিনে দাও না!’ তোমার ভাইয়ের পকেট তখন গড়ের মাঠ। পায়ে হেঁটে টিউশনিতে যায়। বাস ভাড়াটুকুও নেই। তারপরে কীভাবে কীভাবে তোমাকে যেন একটা ব্যাট কিনে দিয়েছিল সে। এই ব্যাট দিয়ে মেরেই তুমি একবার তোমার ভাইয়ের মাথা ফাটিয়েছিলে।
.
একদিন তোমার হলুদ বসন্ত পাখিকে নিয়ে তুমি ওমর ভাইয়ের ফুচকার দোকানে ফুচকা খাচ্ছিলে। দেখে ফেলে তোমার বাবা। সেদিন রাতে বাবা তোমাকে কড়া কিছু কথা শোনায়। অভিমান করে তুমি ভাত না খেয়ে শুয়ে পড়ো। তোমার ভাই, গভীর রাতে তোমাকে ডেকে তুলে। নরম কথায় তোমাকে বোঝানোর চেষ্টা করে। তুমি বিরক্ত হও। তবুও সে কথা চালিয়ে যেতে থাকে। ভাত খাবার অনুরোধ করে। তুমি চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করো, শুরু করো ধাক্কাধাক্কি, একপর্যায়ে ব্যাট দিয়ে মেরেই বসলে। দশটা সেলাই পড়েছিল তোমার ভাইয়ের মাথায়।
.
আরেকদিনের কথা। তোমার ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল সিঁড়িতে। ইফতারির ঠিক পর পর, চাঁদ রাত ছিল বোধহয়। হাতে একটা শপিং ব্যাগ। মুখ শুকনো। দেখে মনে হচ্ছিল বেশ ক্লান্ত। জিজ্ঞাসা করলাম, কী হয়েছে। ফোঁস করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলতে শুরু করল সে, ‘আর বইলো না! বড়লোকের রঙের কাহিনি, দুই মাস ধরে টিউশনির টাকা দেয় না। টাকা দিবে বলে আজকে অনেকক্ষণ বসাইয়া রাখছিল ড্রয়িংরুমে। ইফতারির সময় হয়ে যাইতেছে তাও কেউ কিছু বলে না। আমি যে একটা মানুষ, ড্রয়িংরুমে বইসা আছি এক দেড় ঘণ্টা ধরে কেউ মনে হয় চোখেই দেখেনি। লাস্টে ইফতারির ১০-১৫ মিনিট আগে ছাত্রের মা এসে হাসিমুখে বলল, ‘বাবা নাহিদ! একটা ঝামেলা হয়ে গেছে, আমাদের ইফতারির পরে জুয়েলারি কিনতে যেতে হবে, আগামীকাল ঈদ বুঝতেই পারছো। কিছু মনে কইরো না বাবা, ঈদের পরে এসে টাকাটা নিয়ো’। আমি বহু কষ্টে মুখে হাসি ধরে রেখে বললাম, ‘ঠিক আছে আন্টি, সমস্যা নেই’। কী ছোটলোক দেখো, আমাকে একবারের জন্যও ইফতার করতে বলল না, ওরা বললেও অবশ্য আমি ইফতারি করতাম না’।
.
আমি জিজ্ঞাসা করলাম, তোমার হাতে কী?
-ও বলল, পাঞ্জাবি।
‘তোমার জন্য’?
-‘না’।
‘তাহলে?’
-‘কার আবার! আমার ছোট্ট ভাইটার জন্য’।
.
পাঞ্জাবি কেনার টাকা কোথায় পেলে জিজ্ঞাসা করাতে সে রহস্যময় একটা হাসি দিয়েছিল। চেপে ধরার পর বলেছিল, ’তার এক বন্ধুর কাছ থেকে ধার করেছে’।
.
এই পাঞ্জাবিটাই ছিল তোমার থ্যাঁতলানো শরীরে। রক্ত জমাট বেঁধেছিল। তোমার সেই রক্ত মেশানো পাঞ্জাবিটা জড়িয়ে ধরে এখনো তোমার ভাই কাঁদে।
.
বাহ! খুব বড় বাহাদুর তুমি, ভালোবাসার জন্য জীবন দিয়েছ! তালিয়া, ইস বীর বাহাদুরকে লিয়ে বহুতই তালিয়া!
.
সামান্য একটা মেয়ের ভালোবাসার মিথ্যে অভিনয়ে ভুলে তুমি জীবন দিলে, আর এই অকৃত্রিম ভালোবাসা তোমার চোখেই পড়ল না! আহারে প্রেমিক পুরুষ, ভালোবাসার তুমি কিছুই বুঝো না!
.
তোমার বাবা... রাতজাগা ট্রেনের হুইসেলে হুঁশ ফিরল। কী পাগলামি করতে বসেছি আমি এই রাতদুপুরে। এমন একজনকে লিখতে বসেছি, যার কাছে কোনোভাবেই পৌঁছানো সম্ভব না।
.
সশব্দে ল্যাপটপ বন্ধ করে ঘরের বাতি নিভিয়ে দিলাম। সবকটা জানালা খুলে দেবার পরেও ঘরের বাতাসে গুমোট লাগছে। বিষণ্ণ নিয়ন আলোয় ভেসে যাচ্ছে ফাঁকা ফুটপাত। অন্ধকার ঘর যেন আততায়ীর মতো ঝাঁপিয়ে পড়ল আমার ওপর বিভীষিকাময় স্মৃতিগুলো নিয়ে। সুনিপুণভাবে যন্ত্রণার হুল ফোটাতে লাগল আপাদমস্তক। ভুলে থাকতে চাইছি বীভৎস রক্তাক্ত লাশের কথা, নাহিদের চোখের জল, আংকেলের শূন্য চাহনি, আন্টির আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে দেওয়া কান্না... পারছি না কিছুতেই। অসহায় লাগছে। রাগ লাগছে। প্রচণ্ড ক্রোধে সুনীলের কবিতার মতোই দু চারটা নিয়ম ভাঙতে ইচ্ছে করছে। ইচ্ছে করছে কাঁচের চুড়ির মতো গুড়ো গুড়ো করে ফেলি এই পৃথিবী।
.
হঠাৎ টের পেলাম প্রচণ্ড ঘেমে গিয়েছি আমি।
তারও কিছুক্ষণ পরে টের পেলাম, আমি কাঁদছি।
.
কোনো মানে হয়?
ফাগুনের দিন শেষ হবে একদিন!
- আব্দুল্লাহ আব্দুর রহমান
.
[ষোলো ৭ম সংখ্যা থেকে নেওয়া, পাওয়া যাচ্ছে সারাদেশে।অর্ডার লিংক কমেন্টে]
.
#ষোলো
#ষোলোর_পাতা_থেকে
তুমি তখন ক্লাস নাইনে পড়ো। তোমার সহপাঠী গালিবকে তার বিলাতফেরত ভাই শিয়ালকোটের ক্রিকেট ব্যাট কিনে দিয়েছিল। খেলার মাঠে গালিবের হাতে সেই ব্যাট দেখে তোমার ঐরকম একটা ব্যাট কেনার ইচ্ছে হলো। সাহস করে বাবাকে বলতে পারলে না। বললে তোমার ভাইকে, ‘ভাইয়া, একটা ব্যাট কিনে দাও না!’ তোমার ভাইয়ের পকেট তখন গড়ের মাঠ। পায়ে হেঁটে টিউশনিতে যায়। বাস ভাড়াটুকুও নেই। তারপরে কীভাবে কীভাবে তোমাকে যেন একটা ব্যাট কিনে দিয়েছিল সে। এই ব্যাট দিয়ে মেরেই তুমি একবার তোমার ভাইয়ের মাথা ফাটিয়েছিলে।
.
একদিন তোমার হলুদ বসন্ত পাখিকে নিয়ে তুমি ওমর ভাইয়ের ফুচকার দোকানে ফুচকা খাচ্ছিলে। দেখে ফেলে তোমার বাবা। সেদিন রাতে বাবা তোমাকে কড়া কিছু কথা শোনায়। অভিমান করে তুমি ভাত না খেয়ে শুয়ে পড়ো। তোমার ভাই, গভীর রাতে তোমাকে ডেকে তুলে। নরম কথায় তোমাকে বোঝানোর চেষ্টা করে। তুমি বিরক্ত হও। তবুও সে কথা চালিয়ে যেতে থাকে। ভাত খাবার অনুরোধ করে। তুমি চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করো, শুরু করো ধাক্কাধাক্কি, একপর্যায়ে ব্যাট দিয়ে মেরেই বসলে। দশটা সেলাই পড়েছিল তোমার ভাইয়ের মাথায়।
.
আরেকদিনের কথা। তোমার ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল সিঁড়িতে। ইফতারির ঠিক পর পর, চাঁদ রাত ছিল বোধহয়। হাতে একটা শপিং ব্যাগ। মুখ শুকনো। দেখে মনে হচ্ছিল বেশ ক্লান্ত। জিজ্ঞাসা করলাম, কী হয়েছে। ফোঁস করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলতে শুরু করল সে, ‘আর বইলো না! বড়লোকের রঙের কাহিনি, দুই মাস ধরে টিউশনির টাকা দেয় না। টাকা দিবে বলে আজকে অনেকক্ষণ বসাইয়া রাখছিল ড্রয়িংরুমে। ইফতারির সময় হয়ে যাইতেছে তাও কেউ কিছু বলে না। আমি যে একটা মানুষ, ড্রয়িংরুমে বইসা আছি এক দেড় ঘণ্টা ধরে কেউ মনে হয় চোখেই দেখেনি। লাস্টে ইফতারির ১০-১৫ মিনিট আগে ছাত্রের মা এসে হাসিমুখে বলল, ‘বাবা নাহিদ! একটা ঝামেলা হয়ে গেছে, আমাদের ইফতারির পরে জুয়েলারি কিনতে যেতে হবে, আগামীকাল ঈদ বুঝতেই পারছো। কিছু মনে কইরো না বাবা, ঈদের পরে এসে টাকাটা নিয়ো’। আমি বহু কষ্টে মুখে হাসি ধরে রেখে বললাম, ‘ঠিক আছে আন্টি, সমস্যা নেই’। কী ছোটলোক দেখো, আমাকে একবারের জন্যও ইফতার করতে বলল না, ওরা বললেও অবশ্য আমি ইফতারি করতাম না’।
.
আমি জিজ্ঞাসা করলাম, তোমার হাতে কী?
-ও বলল, পাঞ্জাবি।
‘তোমার জন্য’?
-‘না’।
‘তাহলে?’
-‘কার আবার! আমার ছোট্ট ভাইটার জন্য’।
.
পাঞ্জাবি কেনার টাকা কোথায় পেলে জিজ্ঞাসা করাতে সে রহস্যময় একটা হাসি দিয়েছিল। চেপে ধরার পর বলেছিল, ’তার এক বন্ধুর কাছ থেকে ধার করেছে’।
.
এই পাঞ্জাবিটাই ছিল তোমার থ্যাঁতলানো শরীরে। রক্ত জমাট বেঁধেছিল। তোমার সেই রক্ত মেশানো পাঞ্জাবিটা জড়িয়ে ধরে এখনো তোমার ভাই কাঁদে।
.
বাহ! খুব বড় বাহাদুর তুমি, ভালোবাসার জন্য জীবন দিয়েছ! তালিয়া, ইস বীর বাহাদুরকে লিয়ে বহুতই তালিয়া!
.
সামান্য একটা মেয়ের ভালোবাসার মিথ্যে অভিনয়ে ভুলে তুমি জীবন দিলে, আর এই অকৃত্রিম ভালোবাসা তোমার চোখেই পড়ল না! আহারে প্রেমিক পুরুষ, ভালোবাসার তুমি কিছুই বুঝো না!
.
তোমার বাবা... রাতজাগা ট্রেনের হুইসেলে হুঁশ ফিরল। কী পাগলামি করতে বসেছি আমি এই রাতদুপুরে। এমন একজনকে লিখতে বসেছি, যার কাছে কোনোভাবেই পৌঁছানো সম্ভব না।
.
সশব্দে ল্যাপটপ বন্ধ করে ঘরের বাতি নিভিয়ে দিলাম। সবকটা জানালা খুলে দেবার পরেও ঘরের বাতাসে গুমোট লাগছে। বিষণ্ণ নিয়ন আলোয় ভেসে যাচ্ছে ফাঁকা ফুটপাত। অন্ধকার ঘর যেন আততায়ীর মতো ঝাঁপিয়ে পড়ল আমার ওপর বিভীষিকাময় স্মৃতিগুলো নিয়ে। সুনিপুণভাবে যন্ত্রণার হুল ফোটাতে লাগল আপাদমস্তক। ভুলে থাকতে চাইছি বীভৎস রক্তাক্ত লাশের কথা, নাহিদের চোখের জল, আংকেলের শূন্য চাহনি, আন্টির আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে দেওয়া কান্না... পারছি না কিছুতেই। অসহায় লাগছে। রাগ লাগছে। প্রচণ্ড ক্রোধে সুনীলের কবিতার মতোই দু চারটা নিয়ম ভাঙতে ইচ্ছে করছে। ইচ্ছে করছে কাঁচের চুড়ির মতো গুড়ো গুড়ো করে ফেলি এই পৃথিবী।
.
হঠাৎ টের পেলাম প্রচণ্ড ঘেমে গিয়েছি আমি।
তারও কিছুক্ষণ পরে টের পেলাম, আমি কাঁদছি।
.
কোনো মানে হয়?
ফাগুনের দিন শেষ হবে একদিন!
- আব্দুল্লাহ আব্দুর রহমান
.
[ষোলো ৭ম সংখ্যা থেকে নেওয়া, পাওয়া যাচ্ছে সারাদেশে।অর্ডার লিংক কমেন্টে]
.
#ষোলো
#ষোলোর_পাতা_থেকে
Forwarded from ষোলো
এই বাচ্চাটা বিজিবির গুলিতে মারা গিয়েছিল।
কোন বিজিবি বলেন তো?
ঠিক বলেছেন যারা আর্মিদের মেরেছিল।
যাদের কাজ সীমান্ত পাহাড়া দেয়া কিন্তু তারপরেও বিএসএফ গুলি করে বাংলাদেশীদের মেরে যায়।
বাচ্চাটার অপরাধ কী ছিল জানেন?
পানি বিক্রি করছিল আন্দোলনের সময়।
ওর লাশটা অনেক্ষণ পড়েছিল বাইরে।
যখন হাসপাতালে নেয়া হয় - চোখটা বন্ধ করার চেষ্টা করেছিল - পারেনি।
শক্ত হয়ে গিয়েছিল চোখ।
একটা পানি বিক্রি করা বাচ্চা কিংবা টোকাই - কত আর তার দাম জীবনের?
আপনার কাছে কিছুই না - কিন্তু আমার আল্লাহর কাছে অনেক।
কত যে দাম এটা আপনারা টের পাবেন আপনাদের মরণের পরে।
এই বাচ্চাটার হয়ে আমি লানত করে রাখলাম - এদের খুনীদের জীবনে যেন কোনোদিন শান্তি না আসে।
Md Sharif Abu Hayat
26 july,2024
#স্বাধীনতা_২.০
কোন বিজিবি বলেন তো?
ঠিক বলেছেন যারা আর্মিদের মেরেছিল।
যাদের কাজ সীমান্ত পাহাড়া দেয়া কিন্তু তারপরেও বিএসএফ গুলি করে বাংলাদেশীদের মেরে যায়।
বাচ্চাটার অপরাধ কী ছিল জানেন?
পানি বিক্রি করছিল আন্দোলনের সময়।
ওর লাশটা অনেক্ষণ পড়েছিল বাইরে।
যখন হাসপাতালে নেয়া হয় - চোখটা বন্ধ করার চেষ্টা করেছিল - পারেনি।
শক্ত হয়ে গিয়েছিল চোখ।
একটা পানি বিক্রি করা বাচ্চা কিংবা টোকাই - কত আর তার দাম জীবনের?
আপনার কাছে কিছুই না - কিন্তু আমার আল্লাহর কাছে অনেক।
কত যে দাম এটা আপনারা টের পাবেন আপনাদের মরণের পরে।
এই বাচ্চাটার হয়ে আমি লানত করে রাখলাম - এদের খুনীদের জীবনে যেন কোনোদিন শান্তি না আসে।
Md Sharif Abu Hayat
26 july,2024
#স্বাধীনতা_২.০
৪। হতাশা: ব্রেকআপ করার সময় অনেক সময় হতাশা জেঁকে বসতে পারে। ইচ্ছে হতে পারে হাল ছেড়ে দেওয়ার। তোমার হতাশাকে ব্যবহার করে শয়তান তোমাকে আবার আগের পথে ফেরত নেওয়ার চেষ্টা চালাবে। মনে রাখবে, তুমি সত্যিকারভাবে না চাইলে, কেউ তোমার জীবন গুছিয়ে দিতে পারবে না। তোমার সমস্যার সমাধান অন্য কেউ এসে করে দিতে পারবে না। দুনিয়ার ইতিহাসে কোটি কোটি মানুষ একা একাই নিজের জীবনকে মেরামত করে ফেলেছে। তুমি মহাজাগতিক এলিয়েন না। তুমি মাটির মানুষ। তুমি পারবে। চাইলেই পারবে।
.
হাজার চেষ্টা করি, কিন্তু পারি না- এটা স্রেফ একটা অজুহাত। কোনো অমোঘ, অপরিবর্তনীয় বাস্তবতা না। এটা লুযারদের কথা। রিয়্যাক্টিভ আচরণ। তুমি তাকে ভুলতে চাচ্ছো না অথবা তাকে ভোলার জন্য যে কষ্টটুকু করতে হবে তা সহ্য করতে চাচ্ছো না- এটাই হলো বাস্তবতা।
তার সাথে যোগাযোগ না করলে কী হবে?
-অনেক কষ্ট হবে। অনেক খারাপ লাগবে।
ওকে, তারপর কী হবে?
-কী আর হবে, অনেক কষ্ট হবে।
.
তো এই কষ্টগুলো মেনে নিয়ে, ধৈর্য ধরে কিছুদিন পার করে দাও। সময়ের সাথে সাথেই সব ঠিক হয়ে যায়। খুব দ্রুতই কেটে যাবে এই মোহ যেটাকে তুমি ভালোবাসা মনে করছো। ব্রেকআপ করে ফেলার পর অপর পক্ষ (যে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চায়) কয়েকটা স্টেইজের মধ্য দিয়ে যায়:
১) কেন ব্রেকআপ হলো পাগলের মতো এটার উত্তর খুঁজে বেড়ানো।
২) উত্তর পাবার পর সেগুলোকে প্রত্যাখ্যান করা। ব্রেকআপ যে হয়েছে এটাই অস্বীকার করা।
৩) বুঝতে পারা যে আসলেই ব্রেকআপ হয়েছে। তাই গভীর কষ্ট, দুঃখ পাওয়া।
৪) প্রাক্তনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা।
৫) প্রাক্তন ফিরে না আসায় তার প্রতি গভীর ক্রোধ জন্ম নেওয়া, প্রতিশোধ নেবার চেষ্টা করা।
৬) সব কিছু মেনে নেওয়া, স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করা।
.
১ থেকে ৬ এ যাওয়া, মানে ব্রেকআপের শুরু থেকে সবকিছু স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে যাবার মধ্যে সময় লাগে গড়ে তিন মাসের মতো। অধিকাংশ ছ্যাঁকা খাওয়া মানুষের এর মধ্যেই ৬ নম্বর স্টেইজে চলে আসে। তিনটা মাস একটু কষ্ট করতে পারবে না? এতোটাই দুর্বল মানুষ তুমি? তুমি তাকে ভুলতে পারছো না- ব্যাপারটা এমন না। তুমি আসলে তাকে ভুলতে চাচ্ছো না। এটা সম্পূর্ণ তোমার নিজের সিদ্ধান্ত।
‘আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যের বাইরে কোনো কাজ চাপিয়ে দেন না।’
.
প্রবন্ধ: যদি মন কাঁদে [ষষ্ঠদশ পর্ব]
বই: আকাশের ওপারে আকাশ
লেখক: লস্ট মডেস্টি টিম
সম্পাদক: আসিফ আদনান
#আকাশের_ওপারে_আকাশ
#LostModesty
.
.
রেফারেন্স কমেন্টে....
রেফারেন্স:
[১] 7 Stages After A Break Up, Psych2Go, ইউটিউব ভিডিও, ডিসেম্বর ৫, ২০১৮- tinyurl.com/yeynt9n8
[২] কারও কারও ক্ষেত্রে আর একটু বেশি সময় লাগতে পারে। এই ধরো গড়ে ৬ মাস । How Long Does It Take to Get over a Breakup? Experts Weigh In, blog.zencare.co- tinyurl.com/a6frxjt6
[৩] সূরা আল-বাকারাহ, ২:২৮৬
.
হাজার চেষ্টা করি, কিন্তু পারি না- এটা স্রেফ একটা অজুহাত। কোনো অমোঘ, অপরিবর্তনীয় বাস্তবতা না। এটা লুযারদের কথা। রিয়্যাক্টিভ আচরণ। তুমি তাকে ভুলতে চাচ্ছো না অথবা তাকে ভোলার জন্য যে কষ্টটুকু করতে হবে তা সহ্য করতে চাচ্ছো না- এটাই হলো বাস্তবতা।
তার সাথে যোগাযোগ না করলে কী হবে?
-অনেক কষ্ট হবে। অনেক খারাপ লাগবে।
ওকে, তারপর কী হবে?
-কী আর হবে, অনেক কষ্ট হবে।
.
তো এই কষ্টগুলো মেনে নিয়ে, ধৈর্য ধরে কিছুদিন পার করে দাও। সময়ের সাথে সাথেই সব ঠিক হয়ে যায়। খুব দ্রুতই কেটে যাবে এই মোহ যেটাকে তুমি ভালোবাসা মনে করছো। ব্রেকআপ করে ফেলার পর অপর পক্ষ (যে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চায়) কয়েকটা স্টেইজের মধ্য দিয়ে যায়:
১) কেন ব্রেকআপ হলো পাগলের মতো এটার উত্তর খুঁজে বেড়ানো।
২) উত্তর পাবার পর সেগুলোকে প্রত্যাখ্যান করা। ব্রেকআপ যে হয়েছে এটাই অস্বীকার করা।
৩) বুঝতে পারা যে আসলেই ব্রেকআপ হয়েছে। তাই গভীর কষ্ট, দুঃখ পাওয়া।
৪) প্রাক্তনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা।
৫) প্রাক্তন ফিরে না আসায় তার প্রতি গভীর ক্রোধ জন্ম নেওয়া, প্রতিশোধ নেবার চেষ্টা করা।
৬) সব কিছু মেনে নেওয়া, স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করা।
.
১ থেকে ৬ এ যাওয়া, মানে ব্রেকআপের শুরু থেকে সবকিছু স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে যাবার মধ্যে সময় লাগে গড়ে তিন মাসের মতো। অধিকাংশ ছ্যাঁকা খাওয়া মানুষের এর মধ্যেই ৬ নম্বর স্টেইজে চলে আসে। তিনটা মাস একটু কষ্ট করতে পারবে না? এতোটাই দুর্বল মানুষ তুমি? তুমি তাকে ভুলতে পারছো না- ব্যাপারটা এমন না। তুমি আসলে তাকে ভুলতে চাচ্ছো না। এটা সম্পূর্ণ তোমার নিজের সিদ্ধান্ত।
‘আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যের বাইরে কোনো কাজ চাপিয়ে দেন না।’
.
প্রবন্ধ: যদি মন কাঁদে [ষষ্ঠদশ পর্ব]
বই: আকাশের ওপারে আকাশ
লেখক: লস্ট মডেস্টি টিম
সম্পাদক: আসিফ আদনান
#আকাশের_ওপারে_আকাশ
#LostModesty
.
.
রেফারেন্স কমেন্টে....
রেফারেন্স:
[১] 7 Stages After A Break Up, Psych2Go, ইউটিউব ভিডিও, ডিসেম্বর ৫, ২০১৮- tinyurl.com/yeynt9n8
[২] কারও কারও ক্ষেত্রে আর একটু বেশি সময় লাগতে পারে। এই ধরো গড়ে ৬ মাস । How Long Does It Take to Get over a Breakup? Experts Weigh In, blog.zencare.co- tinyurl.com/a6frxjt6
[৩] সূরা আল-বাকারাহ, ২:২৮৬
YouTube
7 Stages After A Break Up
A heartbreak or broken heart is a metaphor for the intense emotional—and sometimes physical—stress or pain one feels at experiencing great lost. Dealing with heartbreak is not easy, and shouldn't be easy. Here we share some of the common stages of experiencing…
মানুষ ধরেই নেয়, জীবনের অন্য সব বিষয়ে সে ভুল করতে পারে কিন্তু প্রেমের ক্ষেত্রে তার কোনো ভুল নেই। সে একটা ভুল মানুষকে বেছে নিয়েছিল বা ভুল কাজ করেছে, এটা মানতেই চায় না। মেনে নাও- তুমি ভুল করেছিলে।
.
তাকে ঘিরে তোমার যে রুটিন তৈরি হয়েছিল সেটা বদলে ফেলো। প্রোডাক্টিভ হও। ম্যাচিউর হও। এভাবে চিন্তা করো যে, সে তোমার জীবনে একজন মানুষ হিসেবে ছিল। প্রেমিক-প্রেমিকা হিসেবে না, স্ত্রী বা স্বামী হিসেবে না। জাস্ট একজন মানুষ হিসেবে ছিল। জীবনে অনেক মানুষ আসে। অনেক মানুষের সাথে পরিচয় হয়, আবার তারা জীবন থেকে চলেও যায়। এমন একজন মানুষ হিসেবে গ্রহণ করে নাও তাকে। তুমি তাকে কিনে নাওনি, সে তোমার দাস নয়। সে চলে যেতেই পারে।
.
তাকে হয়তো ১০০% ভুলতে পারবে না। থমকে যাওয়া কোনো গ্রীষ্মের বিকেলে কিংবা গভীর হাওয়ার রাতে হঠাৎ মনে পড়তে পারে তার কথা- স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে নাও। একসময় সে তোমার জীবনে ছিল, ছোট্টবেলার হারিয়ে যাওয়া সময়টার মতো এখন আর সেও নেই–এ কথাটা সহজভাবে নাও। সে এখন অতীত। তোমার ভুলগুলোর কথা ভাবো- তুমি কতো ছেলেমানুষ ছিলে, কতো পাগলামি করেছো। মানুষ তার পিতামাতা, এমনকি সন্তানের মৃত্যুর স্মৃতিও বুকে নিয়ে বেঁচে থাকে। আর তুমি প্রাক্তনের স্মৃতি নিয়ে জীবন পার করতে পারবে না? এটা কোনো কথা? সে চলে গেছে মানে তোমার জীবন শেষ হয়ে যায়নি। জীবনের একটা অধ্যায় শেষ হয়েছে মাত্র। জীবন এর পরেও সুন্দর, সম্ভাবনাময়। জীবনে পরতে পরতে রোমাঞ্চ ছড়িয়ে রেখে তোমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
.
কখনো ধৈর্যহারা হবে না, কখনো ভাববে না ‘আমি পারবো না’। গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে যাও, দেখবে আল্লাহ সাহায্য করবেন। দুনিয়া তো আমাদের জন্য কারাগার। এখানে পদে পদে পরীক্ষা থাকবে, কষ্ট থাকবে, না পাওয়ার বেদনা থাকবে। আল্লাহর জন্য, তাঁকে ভালোবেসে, তাঁর সন্তুষ্টির আশায় এগুলো মেনে নাও। আল্লাহর সন্তুষ্টি মানেই তো জান্নাত। সব না-পাওয়ার আবদার না হয় জান্নাতে গিয়েই করলে।
.
জাহান্নাম থেকে একেবারে শেষে যে মুসলিম ব্যক্তি বের হবেন, সাজাভোগ শেষে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর সময় আল্লাহ বলবেন, ‘চাও।’ সে চাইতে থাকবে। কিছু চাইতে ভুলে গেলে স্বয়ং আল্লাহ তাকে বিভিন্ন জিনিসের কথা স্মরণ করিয়ে দেবেন! আর বলবেন, ‘এটা চাও, ওটা চাও।’ এভাবে আল্লাহ তাকে স্মরণ করাতে থাকবেন, আর লোকটি চাইতে থাকবে। অবশেষে চাওয়ার আর কিছুই থাকবে না। তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন,
‘তোমার সব ইচ্ছা পূর্ণ করা হলো। তার সাথে আরো দশগুণ (তোমাকে দেওয়া হলো)।‘
অপূর্ণতায়, নষ্ট কষ্টে কয়েকটা দিন না হয় যাক, জান্নাতের প্রথম পদক্ষেপই তো বৈশাখী ঝড়ো হাওয়ার মতো ভাসিয়ে নিয়ে যাবে সকল দুঃখ, ভুলিয়ে দেবে সকল অপ্রাপ্তির বেদনা। তাই না?
.
প্রবন্ধ: যদি মন কাঁদে [সপ্তদশ পর্ব[শেষ]
বই: আকাশের ওপারে আকাশ
লেখক: লস্ট মডেস্টি টিম
সম্পাদক: আসিফ আদনান
#আকাশের_ওপারে_আকাশ
#LostModesty
.
.
রেফারেন্স কমেন্টে....
রেফারেন্স:
[১] বুখারী: ৮০৬, আযান অধ্যায়, ১/৭৬৯; ইসলামিক ফাউণ্ডেশন
.
তাকে ঘিরে তোমার যে রুটিন তৈরি হয়েছিল সেটা বদলে ফেলো। প্রোডাক্টিভ হও। ম্যাচিউর হও। এভাবে চিন্তা করো যে, সে তোমার জীবনে একজন মানুষ হিসেবে ছিল। প্রেমিক-প্রেমিকা হিসেবে না, স্ত্রী বা স্বামী হিসেবে না। জাস্ট একজন মানুষ হিসেবে ছিল। জীবনে অনেক মানুষ আসে। অনেক মানুষের সাথে পরিচয় হয়, আবার তারা জীবন থেকে চলেও যায়। এমন একজন মানুষ হিসেবে গ্রহণ করে নাও তাকে। তুমি তাকে কিনে নাওনি, সে তোমার দাস নয়। সে চলে যেতেই পারে।
.
তাকে হয়তো ১০০% ভুলতে পারবে না। থমকে যাওয়া কোনো গ্রীষ্মের বিকেলে কিংবা গভীর হাওয়ার রাতে হঠাৎ মনে পড়তে পারে তার কথা- স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে নাও। একসময় সে তোমার জীবনে ছিল, ছোট্টবেলার হারিয়ে যাওয়া সময়টার মতো এখন আর সেও নেই–এ কথাটা সহজভাবে নাও। সে এখন অতীত। তোমার ভুলগুলোর কথা ভাবো- তুমি কতো ছেলেমানুষ ছিলে, কতো পাগলামি করেছো। মানুষ তার পিতামাতা, এমনকি সন্তানের মৃত্যুর স্মৃতিও বুকে নিয়ে বেঁচে থাকে। আর তুমি প্রাক্তনের স্মৃতি নিয়ে জীবন পার করতে পারবে না? এটা কোনো কথা? সে চলে গেছে মানে তোমার জীবন শেষ হয়ে যায়নি। জীবনের একটা অধ্যায় শেষ হয়েছে মাত্র। জীবন এর পরেও সুন্দর, সম্ভাবনাময়। জীবনে পরতে পরতে রোমাঞ্চ ছড়িয়ে রেখে তোমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
.
কখনো ধৈর্যহারা হবে না, কখনো ভাববে না ‘আমি পারবো না’। গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে যাও, দেখবে আল্লাহ সাহায্য করবেন। দুনিয়া তো আমাদের জন্য কারাগার। এখানে পদে পদে পরীক্ষা থাকবে, কষ্ট থাকবে, না পাওয়ার বেদনা থাকবে। আল্লাহর জন্য, তাঁকে ভালোবেসে, তাঁর সন্তুষ্টির আশায় এগুলো মেনে নাও। আল্লাহর সন্তুষ্টি মানেই তো জান্নাত। সব না-পাওয়ার আবদার না হয় জান্নাতে গিয়েই করলে।
.
জাহান্নাম থেকে একেবারে শেষে যে মুসলিম ব্যক্তি বের হবেন, সাজাভোগ শেষে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর সময় আল্লাহ বলবেন, ‘চাও।’ সে চাইতে থাকবে। কিছু চাইতে ভুলে গেলে স্বয়ং আল্লাহ তাকে বিভিন্ন জিনিসের কথা স্মরণ করিয়ে দেবেন! আর বলবেন, ‘এটা চাও, ওটা চাও।’ এভাবে আল্লাহ তাকে স্মরণ করাতে থাকবেন, আর লোকটি চাইতে থাকবে। অবশেষে চাওয়ার আর কিছুই থাকবে না। তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন,
‘তোমার সব ইচ্ছা পূর্ণ করা হলো। তার সাথে আরো দশগুণ (তোমাকে দেওয়া হলো)।‘
অপূর্ণতায়, নষ্ট কষ্টে কয়েকটা দিন না হয় যাক, জান্নাতের প্রথম পদক্ষেপই তো বৈশাখী ঝড়ো হাওয়ার মতো ভাসিয়ে নিয়ে যাবে সকল দুঃখ, ভুলিয়ে দেবে সকল অপ্রাপ্তির বেদনা। তাই না?
.
প্রবন্ধ: যদি মন কাঁদে [সপ্তদশ পর্ব[শেষ]
বই: আকাশের ওপারে আকাশ
লেখক: লস্ট মডেস্টি টিম
সম্পাদক: আসিফ আদনান
#আকাশের_ওপারে_আকাশ
#LostModesty
.
.
রেফারেন্স কমেন্টে....
রেফারেন্স:
[১] বুখারী: ৮০৬, আযান অধ্যায়, ১/৭৬৯; ইসলামিক ফাউণ্ডেশন
Forwarded from ষোলো
Media is too big
VIEW IN TELEGRAM
ষোলো থেকে একটা ভালোবাসার গল্প শোনাই। যে গল্প মিথ্যা মিডিয়া ভেদ করে বাইরে আসে না। এই গল্প নতুন নয়। এই গল্প ভিতরের। এই গল্প সত্যের।
– Hamzah Bin Azad
– Hamzah Bin Azad
বিনোদন এবং স্বল্প সময়ের ভিডিওতে নিজেদের প্রকাশ করার জন্য চমৎকার মাধ্যম হিসেবে পরিণত হয়েছে রিলস ও টিকটক। তবে, এর ব্যবহারের এমন কিছু দিক আছে, যা নিয়ে কথা বলা প্রয়োজন।
.
•সময় নষ্ট-
রিলস বা টিকটকের কোনো ভিডিওতে কোনোভাবে যদি একটায় ক্লিক করা হয়, না চাইতেও যেন পরেরগুলোও দেখা হয়৷ একটি ভিডিও শেষ হলেই আরেকটি দেখতে ইচ্ছে জাগে। এই ‘আর একটা’ দেখতে গিয়ে কয়েকশ ভিডিও দেখে ফেলা সময়ের নিদারুণ অপচয় ঘটায়।
.
•মনোযোগ নষ্ট ও ব্রেইনে ক্ষতিকর প্রভাব-
একের-পর-এক নতুন ভিডিও এবং মিউজিকের বেশ প্রভাব পড়ে ব্রেইনে। ক্ষণস্থায়ী ভিডিওর ধারাবাহিকতা মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। স্বল্প সময়ে অনেক বেশি ভিডিও দেখার ফলে ব্রেইন অতিরিক্ত ডোপামিন হরমোন রিলিজ করে। বেশি মাত্রায় ডোপামিন রিলিজের কারণে ব্রেইন অশান্ত থাকে। এর ফলে কোনো কাজ নির্বিঘ্নে করা যায় না। সবসময় অস্থিরতা কাজ করে। দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ব্যবহার মস্তিষ্কের সৃজনশীলতা ও চিন্তাভাবনার ক্ষমতাকে কমিয়ে দিতে পারে। দীর্ঘসময় ধরে কাজে ফোকাস করার ক্ষমতা হারিয়ে যায়। তাছাড়াও বেশিক্ষণ স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকার কারণে চোখের সমস্যা, মাথাব্যাথা কিংবা ঘুমের সমস্যাও হয়।
.
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম পাইক্স পিক-এ প্রকাশিত আর্টিকেলে উঠে এসেছে যে, ফেসবুক, টিকটক কিংবা ইউটিউবের এসব রিলসে অভ্যস্ত ব্যক্তিরা কোনো কাজে দীর্ঘক্ষণ মনোযোগ দিতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রের কলরাডো কলেজের সাইকোলজি ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ড. কারা গ্রিনের মতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় উদ্দীপনা সৃষ্টিকারী এসব ফিচারে অভ্যস্ত হয়ে পড়লে একটা সময় মানুষ মানসিকভাবে অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
.
•অশ্লীলতা ও হারাম উপকরণ-
কিছু ভিউ আর লাইকের জন্য রিলস-এ অশ্লীল ও আপত্তিকর বিষয়বস্তু ছড়িয়ে দেওয়া হয়। বিনোদন হিসেবে তোমরা এসব দেখো। কিন্তু এই কুরুচিপূর্ণ কন্টেন্টগুলো কীভাবে তোমাদের মানসিকতা নষ্ট করে দেয়, তোমাকে পশু বানিয়ে ফেলে, তা তুমি টেরও পাও না। এই কন্টেন্টগুলোই ধীরে ধীরে তোমাকে নিয়ে যায় অশ্লীলতার চূড়ান্ত পর্যায়ে।
.
পাগলও নিজের ভালো বোঝে। নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরো না। সামনে এ থেকে মুক্তির পথ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
নীরব ঘাতক: রিলস/টিকটক
–জুনায়েদ
.
[ষোলো ৭ম সংখ্যা থেকে নেওয়া, পাওয়া যাচ্ছে সারাদেশে।অর্ডার লিংক কমেন্টে]
.
#ষোলো
#ষোলোর_পাতা_থেকে
.
•সময় নষ্ট-
রিলস বা টিকটকের কোনো ভিডিওতে কোনোভাবে যদি একটায় ক্লিক করা হয়, না চাইতেও যেন পরেরগুলোও দেখা হয়৷ একটি ভিডিও শেষ হলেই আরেকটি দেখতে ইচ্ছে জাগে। এই ‘আর একটা’ দেখতে গিয়ে কয়েকশ ভিডিও দেখে ফেলা সময়ের নিদারুণ অপচয় ঘটায়।
.
•মনোযোগ নষ্ট ও ব্রেইনে ক্ষতিকর প্রভাব-
একের-পর-এক নতুন ভিডিও এবং মিউজিকের বেশ প্রভাব পড়ে ব্রেইনে। ক্ষণস্থায়ী ভিডিওর ধারাবাহিকতা মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। স্বল্প সময়ে অনেক বেশি ভিডিও দেখার ফলে ব্রেইন অতিরিক্ত ডোপামিন হরমোন রিলিজ করে। বেশি মাত্রায় ডোপামিন রিলিজের কারণে ব্রেইন অশান্ত থাকে। এর ফলে কোনো কাজ নির্বিঘ্নে করা যায় না। সবসময় অস্থিরতা কাজ করে। দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ব্যবহার মস্তিষ্কের সৃজনশীলতা ও চিন্তাভাবনার ক্ষমতাকে কমিয়ে দিতে পারে। দীর্ঘসময় ধরে কাজে ফোকাস করার ক্ষমতা হারিয়ে যায়। তাছাড়াও বেশিক্ষণ স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকার কারণে চোখের সমস্যা, মাথাব্যাথা কিংবা ঘুমের সমস্যাও হয়।
.
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম পাইক্স পিক-এ প্রকাশিত আর্টিকেলে উঠে এসেছে যে, ফেসবুক, টিকটক কিংবা ইউটিউবের এসব রিলসে অভ্যস্ত ব্যক্তিরা কোনো কাজে দীর্ঘক্ষণ মনোযোগ দিতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রের কলরাডো কলেজের সাইকোলজি ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ড. কারা গ্রিনের মতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় উদ্দীপনা সৃষ্টিকারী এসব ফিচারে অভ্যস্ত হয়ে পড়লে একটা সময় মানুষ মানসিকভাবে অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
.
•অশ্লীলতা ও হারাম উপকরণ-
কিছু ভিউ আর লাইকের জন্য রিলস-এ অশ্লীল ও আপত্তিকর বিষয়বস্তু ছড়িয়ে দেওয়া হয়। বিনোদন হিসেবে তোমরা এসব দেখো। কিন্তু এই কুরুচিপূর্ণ কন্টেন্টগুলো কীভাবে তোমাদের মানসিকতা নষ্ট করে দেয়, তোমাকে পশু বানিয়ে ফেলে, তা তুমি টেরও পাও না। এই কন্টেন্টগুলোই ধীরে ধীরে তোমাকে নিয়ে যায় অশ্লীলতার চূড়ান্ত পর্যায়ে।
.
পাগলও নিজের ভালো বোঝে। নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরো না। সামনে এ থেকে মুক্তির পথ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
নীরব ঘাতক: রিলস/টিকটক
–জুনায়েদ
.
[ষোলো ৭ম সংখ্যা থেকে নেওয়া, পাওয়া যাচ্ছে সারাদেশে।অর্ডার লিংক কমেন্টে]
.
#ষোলো
#ষোলোর_পাতা_থেকে
জুলাই আন্দোলনে হতাহতদের চিকিৎসা-ব্যয়ের জন্য আর্থিক সহযোগিতার একটি প্রজেক্ট নিয়েছিলাম আমরা। Masroors Group এর ফান্ডিংয়ে আমরা এখন পর্যন্ত ৩১ জনকে সহযোগিতা করতে পেরেছি। ৩১ জনকে মোট ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা দেওয়া হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ। সামনে আরও দেওয়া হবে ইনশা আল্লাহ।
.
এই কয়দিনে আমাদের সাথে স্বেচ্ছাসেবা দিয়ে সহযোগিতা করেছে ষোলো প্রতিনিধি গোলাম রাব্বি গাজী (মিরপুর-১), শাহেদ বিন কাউসার (কুড়িল) এবং ডেমরার সামাজিক সংগঠন "তরঙ্গসংঘ" এর রাকিব ভাইয়া। আমরা আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
.
উল্লেখ্য, এই প্রজেক্টটির অর্থদাতা Masroors Group। ষোলো টিম এটা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে। প্রজেক্ট বাস্তবায়নের ছবি-ভিডিও শীঘ্রই শেয়ার করা হবে ইনশা আল্লাহ।
.
এই কয়দিনে আমাদের সাথে স্বেচ্ছাসেবা দিয়ে সহযোগিতা করেছে ষোলো প্রতিনিধি গোলাম রাব্বি গাজী (মিরপুর-১), শাহেদ বিন কাউসার (কুড়িল) এবং ডেমরার সামাজিক সংগঠন "তরঙ্গসংঘ" এর রাকিব ভাইয়া। আমরা আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
.
উল্লেখ্য, এই প্রজেক্টটির অর্থদাতা Masroors Group। ষোলো টিম এটা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে। প্রজেক্ট বাস্তবায়নের ছবি-ভিডিও শীঘ্রই শেয়ার করা হবে ইনশা আল্লাহ।